ষ্টাফরিপোর্টার: ঐতিহ্যবাহী নোয়াখালী পাবলিক লাইব্রেরীর এক যুগের বেশি সময় অবহেলিত থাকার পর অবশেষে স্মৃতি বিজড়িত আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন ভবনের কাজ শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে জেলা শহরের টাউনহল মোড়ের পুরাতন পাবলিক লাইব্রেরী অপসারণ করে নতুন ৪তলা বিশিষ্ট এ ভবনের কাজের উদ্ধোধন করেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও পাবলিক লাইব্রেরী ব্যবস্থপনা কমিটির সভাপতি দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী পাবলিক লাইব্রেরীর কার্যনির্বাহী সদস্য ও নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, গনপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ মোহাম্মদ আন্দালিব, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী একরামুল হক, নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) অমিত দেব. জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোজাম্মেল হক মিলন, নোয়াখালী পাবলিক লাইব্রেরীর সাধারণ সম্পাদক সামসুল হাসান মীরন, লেখক-গবেষক ফখরুল ইসলাম প্রমুখ।
১৮৯৭ সালে নোয়াখালীর পুরোনো জেলা শহরে এ লাইব্রেরী তৎসময়ে শিশু কিশোর থেকে শুরু করে সর্বস্তরে জ্ঞান পিপাসু মানুষের একমাত্র জ্ঞান অন্বেষন তথা বই ও পত্রপত্রিকা পড়ার প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে উঠে। মেঘনার করাল গ্রাসে নোয়াখালীর পুরোনো জেলা শহর নদীগর্ভে বিলীন হলে ১৯৬৫ সালে বর্তমানে জেলা শহরের প্রানকেন্দ্র সরকারি ৫ শতাংশ ভুমিতে টিনের ও কাঠের বেড়া দিয়ে এটি গড়ে তোলা হয়। সেই থেকে এ প্রতিষ্ঠানটি জেলা প্রশাসকগন সভাপতি এবং জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তি ও জ্ঞান পিপাসুদের নিয়ে কার্যক্রম চলে আসছিলো। কালের বিবর্তনে এটি বেসরকারী পাবলিক লাইব্রেরী হবায় এবং সরকারি খাসজমিতে নির্মাণ হবার কারণে এটি কার্যত প্রসার ও উন্নয়ন ঘটেনি।
এ লাইব্রেরীতে বহুগুনীজন ও শিক্ষাবিদ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন জাতীয় নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, জাতীয় সংসদের সাবেক স্পীকার জননেতা মরহুম আবদুল মালেক উকিল।
নোয়াখালীর এ ঐতিহ্যবাহী পাবলিক লাইব্রেরীতে অনেক পুরোনো ও দূষ্পাপ্য বই ও রেফারেন্স বই আছে। দীর্ঘসময় এ সকল দূর্লভ বই সংরক্ষন না করায় অনেক কিছু নষ্ট হয়ে পড়ে। টিনের চাল দিয়ে পানি পড়ে অনেক বই নষ্ট হয়ে যায়। তারপরও এখানে এখানো অনেক দূর্লভ বই রয়েছে, যাহা কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।
১৯৮৭ সালের একজন বিট্রিশ নাগরিক এদেশে ভ্রমনে এসে ঐতিহ্যবাহী এ লাইব্রেরী দৈন্যদশা দেখে তিনি তার সরকারের সহযোগিতায় লাইব্রেরী আধুনিক ক্যাটালগসহ ভবনের সংস্কার করে সবমহলের পাঠকের উপযোগী করে গড়ে তুলেন। স্বাধীনতার পর নোয়াখালী জেলা শহরে জ্ঞান চর্চা ও পত্রিকা ও বই পড়ার একমাত্র প্রতিষ্ঠান ছিলো এটি। জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সব বয়সের লোকজন এ লাইব্রেরীতে পড়ালেখাসহ জ্ঞান আরোহনে সময় কাটাতো। কিন্তু আর্থিক অনটন, সংস্কার না করায় এটি দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে।
বিভিন্ন সময়ে এ নিয়ে লেখালেখি হবার পর নোয়াখালী পাবলিক লাইব্রেরী সভাপতি বিগত জেলা প্রশাসকগন এটিকে খাস করে লাইব্রেরীর নামে বন্দোবস্ত করিয়ে নেন। তারই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় সরকার বিগত প্রায় এক যুগের বেশি সময় অবহেলিত থাকার পর অবশেষে মুক্ত চিন্তার পাঠকদের জ্ঞান অন্বেষনের অন্যতম প্রতিষ্ঠান শতবর্ষের স্মৃতি বিজড়িত নোয়াখালী পাবলিক লাইব্রেরীর আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন ভবনের কাজ শুরু হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও পাবলিক লাইব্রেরীর সভাপতি দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, এটি একটি দূর্লভ লাইব্রেরী, এখানে শতবছরের পুরোনো বই রয়েছে। এটি জায়গা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে পুর্বে এখানে পুর্নাঙ্গ ভবন করা যায় নাই, এখন আর কোনো বাঁধা নেই। আমরা দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করে পাঠক ও জ্ঞান পিপাসুদের বসার ব্যবস্থা করতে পারবো।

- প্রচ্ছদ
- জাতীয়
- নোয়াখালী
-
Featured
-
Featured
-
Featured
-
- লক্ষ্মীপুর
- ফেনী
- প্রবাসে বৃহত্তর নোয়াখালী
- মতামত
- আরও
Select Page