ষ্টাফরিপোর্টার: রমজান পরিপূর্ণ ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র ৯দিন। ঈদকে সামনে রেখে নোয়াখালীতে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা।
গত কয়েক বছর মহামারী করোনার প্রকোপে ঈদের বাজার অনেকটা ঠান্ডা থাকলেও এবার তা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। প্রচন্ড তাপদাহের কারণে দিনের বেলা বেচাকেনা কম থাকলেও সন্ধ্যার পর মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে থাকে উপচেপড়া ভিড়। তবে পণ্য সামগ্রীর দাম আগের বছরগুলোর তুলনায় বেশি হওয়ায় প্রিয়জনদের মুখে হাসি ফোটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মধ্যবিত্তের। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারীভাবেই দাম বেশি হওয়ায় বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে।
বুধবার (১২ এপ্রিল) সরেজমিনে জেলার প্রধান শহর মাইজদীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নোয়াখালী জেলা শহরের প্রতিটি বিপণি বিতানে কেনাকাটার ধুম পড়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতাদেও হাঁকডাকে সরগরম প্রতিটি জামা-কাপড়, জুতা ও কসমেটিকসের দোকান। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে হাসি খুশি ভাবে নতুন জামা কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। বেচাকেনা জমে উঠায় খুশি বিক্রেতারাও।
জেলা শহরের পৌর সুপার মার্কেট, হকার্স মার্কেট এবং টার্গেট, কলকাতা বাজারসহ বিভিন্ন বিপণি বিতান ও জুতার শোরুম ঘুরে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ও ক্রেতারা দর কষাকষি করে পছন্দের পণ্য কিনছেন।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রমজানের শুরুর দিকে মার্কেটে বেশি বিক্রি হয় বাচ্চা ও মহিলাদের জামা কাপড়ের। দিন যতই বাডে এসব পণ্যের বিক্রিও ততই বাড়ে। এখন রমজানের শেষ দিকে এসে সব ধরনের মানুষের চাহিদা মতো কেনাকাটা করছে ভোক্তারা।
এদিকে, বাজারে জামা-কাপড়সহ সব ধরনের জিনিসপত্রের চড়া মূল্য হওয়ায় বরাবরের মতোই ফুতপাতের দোকানে ভিড় করছে নিন্ম আয়ের মানুষ ও মধ্যভিত্তরা। শহরের হকার্স মার্কেট এলাকায় কথা হয় ঈদের কেনাকাটা করতে আসা জামাল উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত বছরও অভিজাত বিপণী বিতান থেকে পরিবারের জন্য ঈদের কেনাকাট করেছি। এবার তা সম্ভব হচ্ছে না। নোয়াখালী সুপার মাকের্টে গিয়েছি কেনাকাটা করতে, সেখানে যে জামা-কাপড়ই ধরি আগুনের মতো দাম। বাজেটের সঙ্গে দামের কোন মিল নেই। তাই বাধ্য হয়ে হকার্স মাকের্টে এলাম। এমন আক্ষেপ নিম্নও মধ্যভিত্ত পরিবারের সকল সদস্যের।
মার্কেটের ভেতরে কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। কেনাকাটা করতে পেরে সবাই খুশি। বেশিরভাগ ক্রেতাই এসেছে ছেলে, মেয়ে ও পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করতে। পছন্দের পণ্য কিনতে পেরে খুশি সবাই।
নোয়াখালী পুরান শহর সোনাপুরে গড়ে ওঠেছে সোনাপুর পৌর সুপার মার্কেট। সেখানে কেনাকাটা করতে আসেন নার্গিস আক্তার ও বিলকিস আক্তার নামের দুই বোন। তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার প্রতিটি জিনিসের দাম দুই থেকে তিনগুন বেড়েছে। বাজেটের সঙ্গে কেনাকাটার কোন মিল খুঁজে পাচ্ছি না। এবাবে হলে সাধ্যের মধ্যে উত্তম কেনাকাটা সম্ভব নয়।
একই মার্কেটের একাধিক দোকানী বলেন, মার্কেটটি নতুন করে গড়ে ওঠেছে। মার্কেট এখনো জমে ওঠেনি। মার্কেটে নানা অব্যবস্থাপনার কারণে ক্রেতারা আগ্রহ পাচ্ছেনা।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নোয়াখালীর সহকারী পরিচালক মো. কাউচার মিয়া বলেন, বেচাকেনায় যেখানে ভোক্তাদের অধিকার ক্ষুন্ন করে অতিরিক্ত দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে আমাদের অভিযানের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা বেশ কয়েকটি বিপণী বিতানে অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে