ষ্টাফরিপোর্টার: নোয়াখালীতে স্কুলছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতা (১৪) হত্যা মামলায় তার প্রাইভেট শিক্ষক আব্দুর রহিম রনিকে একমাত্র অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো.শাহ্ আলমের কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগপত্র জমা দেন তিনি। এ সময় সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো.শাহ্ আলম বলেন, ‘নিহত স্কুলছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতার প্রাইভেট শিক্ষক আব্দুর রহিম রনিকে একমাত্র আসামি করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এখন আইন অনুযায়ী সেটা আদালতে পাঠাব। সংশ্লিষ্ট আদালত বিষয়টি দেখবেন। আগামী ৭মে এ মামলার দিন ধার্য আছে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা স্পেসল্যাব চৌধুরী প্রমোজ বলেন, ‘আদালতে দেয়া রনির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুযায়ী, মাইজদী পৌর এরাকার মেস্ত্রী বাড়ির পুকুর থেকে অদিতাদের ঘরে লাগানো তালার চাবি উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া, যে বালিশ দিয়ে অদিতাকে হত্যা করা হয়েছে, সেই বালিশ উদ্ধার করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অদিতার সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় রনির মাথা ও ঘাড়ে আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে। রনির পরিহিত শার্টে অদিতার ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া গেছে। সব সাক্ষ্য প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।’
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাইভেট শিক্ষক আব্দুর রহিম রনিকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দিয়েছি। তার ডিএনএ টেস্টের ফলাফল, কললিস্ট এবং অন্যান্য আলামতের উপর ভিত্তি করে এ চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় ৩১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক আটক ইসরাফিলকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর নোয়াখালী পৌর এলাকার লক্ষ্মী নারায়ণপুর এলাকার নিজ বাসায় খুন হন নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতা। ওই রাতে জাহান মঞ্জিলের একটি কক্ষ থেকে অদিতার রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। যা অর্ধনগ্ন,গলা ও দুই হাতের রগ কাটা অবস্থায় বিছানায় পড়ে ছিল।
ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ তাৎক্ষনিক অদিতার প্রাইভেট শিক্ষক আব্দুর রহিম রনিসহ তিনজনকে আটক করে। এ ঘটনায় নিহত অদিতার মা রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে সুধারাম মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দুই দিন পর আব্দুর রহিম রনি হত্যার দায় স্বীকার করে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো.এমদাদ আলীর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে রনি জানান, ২২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টার সময় আব্দুর রহিম রনি অদিতার বাসায় যান। এরপর গল্পের একপর্যায়ে অদিতাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। তখন ধস্তাধস্তির সময় রনির ঘাড়ে ও গলায় অদিতার নখের আঁচড় লাগে। এরপর রনি ওড়না দিয়ে অদিতার হাত বেঁধে আবারও ধর্ষণের চেষ্টা করেন এবং ব্যর্থ হন। এ সময় অদিতা এই ঘটনা সবাইকে জানিয়ে দেয়ার হুমকি দিলে রনি তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে এবং অন্য দিকে মোড় ঘুরানোর লক্ষ্যে রনি ঘরে থাকা ছোরা দিয়ে অদিতার হাত ও গলা কেটে রাখেন। একইসঙ্গে ঘরে থাকা আলমিরার মালামাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখেন।

- প্রচ্ছদ
- জাতীয়
- নোয়াখালী
-
Featured
-
Featured
-
Featured
-
- লক্ষ্মীপুর
- ফেনী
- প্রবাসে বৃহত্তর নোয়াখালী
- মতামত
- আরও
Select Page