স্টাফ রিপোটার: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন ও মুক্তি নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। একদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজার রায়ের সার্টিফাইড কপি দিতে বিলম্ব অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার রায় ঘনিয়ে আসা ছাড়া আরো ৩৫টি মামলা রয়েছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে আগামী নির্বাচনের আগে কারাগার থেকে দলীয় নেত্রী মুক্তি পাবেন কি না সে প্রশ্ন এখন নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে।
দলের তৃণমূল থেকে শুরু করে স্থায়ী কমিটির সদস্য পর্যন্ত সবাই দুশ্চিন্তায় থাকলেও বক্তৃতা বিবৃতিতে সেটা প্রকাশ করতে চাইছেন না নেতারা।
তৃণমূলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নেত্রীর মুক্তির বিষয়টিই তাদের কাছে এখন মুখ্য বিষয়। কেউ কেউ নেত্রীর দীর্ঘ সময় জেলে থাকার বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত থাকলেও দুই-একজন বলছেন নেত্রীকে সরকার চাইলেও বেশি দিন আটকে রাখতে পারবে না। কারণ, যে মামলায় সাজা হয়েছে সে মামলায় হাইকোর্টে আপিল করলে তিনি জামিন পাবেন। আর অন্য যেসব মামলা রয়েছে সবগুলোই জামিনযোগ্য মামলা। তাই শিগগিরই জামিন পেয়ে বেরিয়ে আসবেন খালেদা জিয়া।
আবার অনেকে বলছেন, সরকার তাদের নেত্রীকে নিয়ে বড় ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তাকে সহসা ছাড়বে বলে মনে হয় না। মামলার রায়ের কপি দিতে এক সপ্তাহ লাগার কথা নয়। কিন্তু এক সপ্তাহেও রায়ের কপি দেওয়া হয়নি। কতদিন পরে দেবে তাও বোঝা যাচ্ছে না। সুতরাং এটা যে ষড়যন্ত্র তা বোঝাই যাচ্ছে।
জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, নেত্রী জামিন পাবেন তবে কতদিনে পাবেন সেটা বলতে পারছি না।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন দুলাল বলেন, আদালত মামলার রায়ের কপি দিতে যে সময় নিচ্ছে তাতে আমরা শঙ্কায় আছি। আদৌ রায় লেখা হয়েছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রফিক সিকদার বলেন, একটি মিথ্যা মামলায় দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়েছে। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করারও সুযোগ দিচ্ছে না। সাধারণত কোনো মামলার রায়ের কপি পেতে এত সময় লাগে না। এতেই সন্দেহ হয় অন্য কোনো মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে দীর্ঘ সময় কারাগারে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক রোকেয়া চৌধুরী বেবী বলেন, আমরা শঙ্কার মধ্যে আছি। সরকার আমাদের চেয়ারপারসনকে যেভাবে একটি পরিত্যাক্ত স্থানে রেখেছে তাতে তো শঙ্কা হবেই। বিএনপিকে নিয়ে তারা বড় ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারই অংশ হিসেবে নেত্রীকে দীর্ঘ সময় কারাগারে রাখতে চাচ্ছে।
মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ বলেন, আমরা হতাশার মধ্যে আছি। দলের চেয়ারপারসনকে নির্জন একটি স্থানে রাখা হয়েছে। তিনি কীভাবে কী অবস্থায় আছেন জানি না। আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি চাই।
যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য গিয়াস উদ্দিন মামুন বাংলানিউজকে বলেন, হতাশা-আশঙ্কা তো থাকবেই। তারপরও বলতে চাই, নেত্রীকে বেশিদিন কারাগারে রাখতে পারবে না সরকার। যত চেষ্টাই করুক আইনি লড়াইয়ে শিগগিরই বেড়িয়ে আসবেন নেত্রী। আর নেত্রী যেদিন জামিনে মুক্ত হবেন সেদিন ঢাকায় মানুষের ঢল নামবে। সরকার যে উদ্দেশ্যে নেত্রীকে সাজা দিয়েছে সেটা তাদের জন্য বুমেরাং হবে।