Select Page

আজ শনিবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি সময়: সন্ধ্যা ৬:৫৫

রাখাইনের খুনিদের আন্তর্জাতিক আদালতে নেওয়ার দাবি তিন নোবেলজয়ীর

দৈনিক নোয়াখালীবার্তা
Noakhali Barta is A News Portal of Noakhali.

ফেব্রু ২৬, ২০১৮ | বিশেষ প্রতিবেদন

বিশেষ প্রতিবেদন: বাংলাদেশ সফররত ইরানের শিরিন এবাদি, ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান ও যুক্তরাজ্যের মরিয়েড মুগুয়ার সোমবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরির্দশন করে সাংবাদিকদের সামনে এ দাবি জানান।

আরব বসন্তের দিনগুলোতে ইয়েমেনের বিপ্লবের প্রতীক হয়ে ওঠা সাংবাদিক, অধিকারকর্মী তাওয়াক্কুল কারমান ২০১১ সালে আরও দুইজনের সঙ্গে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। কুতুপালং আশ্রয় শিবির ঘুরে দেখার পর তিনি বলেন, মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা গণহত্যা ছাড়া আর কিছু নয়।

এরপরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি চুপ থাকে, সেটা পৃথিবীর সব মানুষের জন্য লজ্জার হবে মন্তব্য করে এই নোবেল বিজয়ী বলেন, “যারা এ অপরাধের জন্য দায়ী, তাদেরকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানাচ্ছি।”

রাখাইনের নিরাপত্তা বাহিনীর স্থাপনায় হামলার পর গতবছর ২৫ অগাস্ট থেকে সেনাবাহিনীর এই দমন অভিযান শুরু হয়, যাকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র।

অন্যদিকে মিয়ানমারের নোবেল বিজয়ী নেত্রী অং সান সুচির সরকার ওই হামলার জন্য রোহিঙ্গা গেরিলাদের একটি দলকে দায়ী করে আসছে। সেনাবাহিনীর অভিযানকে তারা বলছে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই’।

সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে গত ছয় মাসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশী বাংলাদেশে। গ্রামে গ্রামে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওযের ভয়াবহ বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে তাদের ভাষ্যে।

কিন্তু নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য ১৯৭৬ সালে শান্তিতে নোবেল পাওয়া মরিয়েড মুগুয়ার বলছেন, ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নারীরা হত্যা-ধর্ষণ আর বর্বরতার যে বিবরণ তাদের সামনে দিয়েছেন, তাতে এটা স্পষ্ট যে মিয়ানমারে পরিকল্পিত নিধনযজ্ঞ চলছে।

“এটা স্পষ্টভাবে স্পষ্টভাবে স্পষ্টভাবে গণহত্যা। বার্মিজ সরকার আর সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যা চালাচ্ছে, সেটা মিয়ানমার থেকে, ইতিহাস থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মুছে ফেলার পরিকল্পিত চেষ্টা।”

আন্তর্জাতিক আদালতে রাখাইনের খুনিদের বিচারের দাবি জানিয়ে এই নোবেল বিজয়ী বলেন, “মানুষ হিসেবে আমরা মিয়ানমার সরকারের এই নীতিকে ধিক্কার জানাই।”

তিনি বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ভাবছে, এভাবে নরহত্যা চালিয়ে যেতে তাদের কোনো বাধা নেই। তাদের এই দায়মুক্তি বন্ধ করতে হবে।

“আমরা জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং সব সংস্থাকে বলবে, এই রোহিঙ্গাদের আমরা বাংলাদেশে ফেলে রাখতে পারি না।… যথেষ্ট হয়েছে! আমাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে, আর নীরব থাকলে চলবে না। এই হত্যাযজ্ঞ আমাদের এখনই থামাতে হবে।

২০০৩ সালে শান্তিতে নোবেল পাওয়া ইরানি নাগরিক শিরিন এবাদি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরুর পর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও শরর্ণাথীদের ঢল থামছে না। বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর কারণে বাংলাদেশের মানুষের ওপরও বড় ধরনের চাপ তৈরি হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের মানুষ ও সরকারের ভূমিকার প্রসংশা করেন তিনি।

শিরিন এবাদি বলেন, “মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনী যেসব অপরাধ ঘটিয়েছে, তার বিচার হতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এটা নিশ্চিত করতে হবে যাতে দোষীদের আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল কোর্টে বিচারের মুখোমুখি করা হয়।”

আর জাতিসংঘে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নতুন কোনো প্রস্তাব আনা হলে চীন বা অন্য কোনো দেশকে ভিটো না দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিজের চোখে দেখতে নোবেল বিজয়ী এই তিন নারী রোববার কক্সবাজারে পৌঁছান।

প্রথম দিন দুই ভাগে ভাগ হয়ে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন তারা। সোমবার সকালে কক্সবাজারে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে তারা যান উখিয়ার বালুখালী ও থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে বৈঠকের পর তিন নোবেল বিজয়ী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। নারী অধিকার সংগঠন ‘নারীপক্ষ’, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাসহ (আইওএম) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments Box

সর্বশেষ সংবাদ

Archive Calendar

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০