স্টাফ রিপোটার: শিবির সন্দেহে স্কুল, কলেজসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নয় শিক্ষার্থীতে পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলে আটক রাখার পর প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদের পুলিশ দেওয়া হয়। এছাড়া সাতজন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্ত্বরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার আয়োজন করে ফোকাস কোচিং সেন্টার। এর কয়েক মিনিটের মধ্যে ১৬ জনকে আটক করে বঙ্গবন্ধু হলের ২৩১ নম্বর কক্ষে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
সেখানে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত আটক রেখে তাদের মারধর করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের উপস্থিতিতে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয় জনসহ নয়জনকে পুলিশে সোপর্দ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে অধ্যয়নরত প্রথম বর্ষের সাত শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শিবিরের সংশ্লিষ্টতা না থাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত সংবাদকর্মীদের সঙ্গেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অসদাচারণ করেন।
আটক শিক্ষার্থীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শামসুজ্জামান, সংস্কৃত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মিজানুর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শাহরিয়ার তানজিম, মনিরুল ইসলাম ও একই বিভাগের প্রথম বর্ষের রহমতুল্লাহ ইসলাম, মাসুম, রাজশাহী সিটি কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী তন্ময়, লোকনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বি। নয়জনই এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ছাড়া পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- ইতিহাস বিভাগের সাদরুজ্জামান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মিজানুর রহমান ও খলিলুর রহমান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের আরিফুল ইসলাম, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের নাঈম ইসলাম, সমাজকর্ম বিভাগের সুজন আলী, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের আমিনুল ইসলাম।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সাংবাদিকদের বলেন, তারা জানতে পারেন শহীদ মিনারে কোচিং সেন্টারের নামে শিবিরের মিটিং হচ্ছে। পরে তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকায় ৯ জনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এছাড়া প্রথম বর্ষের সাতজন শিক্ষার্থীর শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকায় প্রক্টরের উপস্থিতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘নয়জনকে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রলীগের ছেলেরা। বাকি সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রাধ্যক্ষ, আবাসিক শিক্ষক ও আমাদের সামনে ছেড়ে দিয়েছে।’
জানতে চাইলে মহানগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন খান জানান, ছাত্রলীগ ৯ জন শিক্ষার্থীকে পুলিশে দিয়েছে। তাদের চিকিৎ ৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসা শেষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।