ফেনী প্রতিনিধি: প্রচলিত ধারণা মতে পুকুর কিংবা জলাশয়েই মাছ চাষ করা হয়। যদি বলা হয়, এখন ঘরের ভেতরেই বাণিজ্যিকভাবে চাষ হবে মাছ, এমন একটি প্রযুক্তির কথাই বলছে মৎস অধিদফতর।
শুক্রবার ফেনীতে ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার প্রথমদিনে এমন একটি প্রকল্প উপস্থাপন করেছে ফেনী জেলা মৎস অধিদফতর।
জেলা মৎস কর্মকর্তা ড. মুনীরুজ্জামান জানান, এ পদ্ধতির নাম ‘আরএএস’ (রিসার্কুলেটিং অ্যাকুয়াকালচার সিস্টেম)। এতে ঘরের ভেতর মাছ চাষ করে পুকুরের ২০/২৫ গুণ বেশি মাছ পাওয়া সম্ভব। বাংলাদেশে পদ্ধতিটি একেবারেই নতুন। অল্প সংখ্যক মানুষ এটির প্রয়োগ করেছে। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পদ্ধতিটি অনেক আগেই প্রচলিত রয়েছে।
তিনি বলেন, এ চাষাবাদ পদ্ধতি অবলম্বন করে শহরের লোকজন তাদের বাসা বাড়ি ও ছাদেই গড়ে তুলতে পারেন মৎস চাষের প্রকল্প। এর মাধ্যমে তা পরিবাবের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবেও সহযোগিতা এবং দূর হবে বেকারত্ব।
মৎস কর্মকর্তা ড. মুনীরুজ্জামান জানান, এ পদ্ধতিতে ঘরের ভেতর ট্যাঙ্কে অথবা অনুরুপ পাত্রের মাধ্যমে মাছ চাষা করা হয়। এতে প্রতিটি ট্যাঙ্কে পাইপ দিয়ে মেকানিকেল ফিল্টার সংযুক্ত করা হয়। মেকানিকেল ফিল্টার ট্যাঙ্কের মাছ ও খাদ্যের বর্জ্য পরিষ্কার করে। পরে এ পরিষ্কার পানি পাম্প দিয়ে বায়োফিল্টারে উত্তোলন করা হয়। এছাড়া মাছ বড় হতে যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেজন্য বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে পানি পরিশোধন করা হয়।
মৎস কর্মকর্তা জানান, এ প্রযুক্তিতে উৎপাদিত মাছের গুণগতমান উন্নত ও স্বাস্থ্যসম্মত। এ পদ্ধতিতে মাছের খাদ্য কম লাগে ও উৎপাদিত মাছ আকারে বড় হয়। রোগবালাই আশঙ্কা না থাকায় এই মাছ উচ্চ মানসম্পন্ন। তবে মাছ চাষের এ পদ্ধতিতে পানি পরিশোধন করে তা ব্যবহার করা হয়। অল্প জায়গায় অধিক উৎপাদন, কোনো ধরনের সংক্রমণ না হওয়া এবং শতভাগ নিরাপদ হওয়ায় এটি বাংলাদেশের মানুষের কাছে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে মনে করেন এ মৎস কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, ফেনীতে কোনো উদ্যোক্তা যদি এ পদ্ধতি অবলম্বন করে চাষাবাদ করতে চায়, তাহলে জেলা মৎস অফিস থেকে তাকে যন্ত্রপাতি জোগাড়সহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হবে।