বার্তা ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বলে ঘোষণা দিলো যুক্তরাষ্ট্রও। জাতিসংঘের পর যুক্তরাষ্ট্রেরও এই ঘোষণাকে রোহিঙ্গা সংকটের আশু সমাধানে মিয়ানমারের ওপর বাড়তি চাপ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
বুধবার (২২ নভেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন এক বিবৃতিতে এই নির্মূল অভিযানের জন্য মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী ও স্থানীয় উগ্র জনগোষ্ঠীকে দায়ী করেন। গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে অভিযান শুরুর সপ্তাহ দুয়েকের মাথায়ই এই নিপীড়নকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ আখ্যা দেয় জাতিসংঘ।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের বিষয়ে আলাপ করতে সম্প্রতি নেপিদো সফর করে যাওয়া টিলারসন বিবৃতিতে বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনী ও স্থানীয় অন্য জাতিগোষ্ঠীর অভিযানে রোহিঙ্গাদের ‘অসহ্য যন্ত্রণা’ সইতে হয়েছে।’
এই অভিযানের কারণ হিসেবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের কথিত একটি সংগঠনের হামলাকে দায়ী করলেও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো উস্কানির কথা বলে এই ভয়াবহ নৃশংসতার ন্যায্যতা প্রমাণ করা যাবে না।’
টিলারসন বলেন, ‘প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণের পর আমাদের কাছে এটাই স্পষ্ট যে, উত্তরাঞ্চলের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালানো হয়েছে।’
এই নৃশংসতায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওয়াশিংটন এই ঘটনার পুরোপুরি তদন্ত চায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ন্যায়বিচার চায়, যার মধ্যে সম্ভাব্য ‘টার্গেট নিষেধাজ্ঞা’ও রয়েছে।
২৪ আগস্ট কথিত ওই হামলার পর ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদে রাখাইনে নিধনযজ্ঞ শুরু করে। এতে এখন পর্যন্ত সোয়া ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। প্রাণ হারিয়েছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। ধর্ষিতও হয়েছে অসংখ্য নারী।
জাতিসংঘ শুরু থেকেই মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে অভিহিত করে আসছে। রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে সংকটের শিগগির সমাধানে যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রও মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে।
তবে প্রথম দিকে এই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল’ অভিযান বলা থেকে বিরত থাকে যুক্তরাষ্ট্র। শিগগির সমাধানের জন্য মিয়ানমারকে চাপদিতে প্রস্তুতি