হাতিয়া প্রতিনিধি:
নোয়াখালীতে যানযট ও জলাবদ্ধতা নিরসন এবং সরকারি ভূমি দখল মুক্ত করতে জেলার ৯টি উপজেলার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
জেলার ৮টি উপজেলায় ওই নির্দেশ বাস্তবায়নে কার্যক্রম চলমান থাকলেও রহস্যজনক কারণে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় এখনো ওই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দ্বীপবাসী।
সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসনের নির্দেশের পর হাতিয়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে সরগরম আলোচনা শুরু হয়। গত ৭ এপ্রিল আধা সরকারি পত্রের মাধ্যমে পুরো জেলায় সরকারি ভূমি দখল মুক্তকরনের নির্দেশের পর জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে পৃথক পত্রের মাধ্যমে হাতিয়া উপজেলায় ৫’শ ১৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হয়। এসব স্থাপনা ৫ মে এর মধ্যে উচ্ছেদ করে হাতিয়া উপজেলা প্রশাসনকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসক।
এরপর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসাবে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রিট ও উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা সাইফুর রহমান উপজেলা সদরের প্রধান সড়কের পাশের সরকারি খালের উপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে যান। অভিযানে রহস্যজনক ভাবে নব-নির্মিত দুইটি ব্রিজ ভেঙ্গে অভিযান সমাপ্ত করে দেন তিনি। এরপর হাতিয়ায় আর কোন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযান পরিচালিত হতে দেখা যায়নি বলে জানান স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে স্থানীয় জনসাধারনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
দ্বীপের বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম, কালা মিয়া, হাফেজ নুরুল করিম, লেদু মিয়া, দিদারুল আলম সহ স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন হাতিয়া উপজেলাটি মেঘনা নদী ব্যাষ্টিত দ্বীপ নিয়ে গঠিত। এখানে বর্ষার মৌসুমে বেশিরভাগ এলাকা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। এরমধ্যে উপজেলার প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সরকারি ভূমি দখল করে এক শ্রেণীর ভূমিগ্রাসী অবৈধভাবে স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। ফলে জলাবদ্ধায় জনর্দূভোগের পাশাপাশি এখানে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয় ওইসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়ায় দ্বীপবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে আসলেও রহস্যজনক কারণে স্থাপনাগুলো এখনো উচ্ছেদ হয়নি। অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের মাধ্যমে সরকারি ভূমি দখল মুক্ত করে জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি জানান দ্বীপবাসী।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ আলম বলেন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে নির্দেশনা পেয়েছি। বড় পরিসরের উচ্ছেদ অভিযানের কারণে কাগজপত্র পর্যালোচনা এবং জনবল সংকট থাকায় অভিযানে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। অচিরেই অফিসিয়াল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস বলেন জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। হাতিয়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রমে কেন বিলম্ব হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে।