স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিজদেশে শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত ৫ দফা বাস্তবায়নে কানাডা বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশ্বস্ত করেছেন কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী ম্যারি ক্লদ বিবেয়্যু।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী’র সাথে আজ বৃহস্পতিবার তাঁর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতকালে সফররত কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী ম্যারি ক্লদ বিবেয়্যু একথা বলেন।
ম্যারি ক্লদ বলেন, ‘মিয়ানমার কর্তৃক বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে- যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে’।
রোহিঙ্গাদের মানবেতর জীবন যাপন সরেজমিনে পরিদর্শন করে মর্মাহত কন্ঠে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির কাছ থেকে যেভাবে শিক্ষা,স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছে–তা নিন্দনীয় ও মানবতা বিরোধী অপরাধ’।
কানাডার মন্ত্রী বলেন, বঞ্চিত রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের সার্বিক উন্নয়নে ইতোমধ্যে কানাডা সরকার ২৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে- যা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির মানবিক অধিকার নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম জনগোষ্ঠি। রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্যে এগিয়ে আসায় তিনি কানাডা সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
বৈঠককালে তাঁরা সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ৬৩তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্স(সিপিসি),রোহিঙ্গা ইস্যু, টেকসই উন্নয়ন ও নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নসহ দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
স্পিকার বলেন, কানাডার সাথে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে। সংসদীয় চর্চা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করে দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ৬৩তম সিপিসিতে কানাডার একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করায় কানাডা সংসদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় ৬৩তম সিপিসি সফলভাবে আয়োজন করায় স্পিকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান ম্যারি ক্লদ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্রুত মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, ‘বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে শতকরা ৭.২ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছে, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখছে’।
নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপকে মাইল ফলক হিসাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নারী ও শিশুদের উন্নয়নে সংসদ সদস্যগণ নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ভূমিকা রাখছেন। যৌতুক, বাল্যবিবাহ, মাতৃ মৃত্যু ও শিশু মৃত্যু হ্রাসে তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে’।
বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনেয়ট প্রিফন্টেইন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।