ষ্টাফ রিপোর্টার :
নোয়াখালী সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কাভার্ডভ্যানে গড়ে তোলা হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ সিএনজি ফিলিং স্টেশন। এতে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
উপজেলার সোনাপুরের অশ্বদিয়া সেতু ও এওজবালিয়া ইউপির হানিফ সোনাপুর-আলেকজান্ডার সড়কের ওপর চলে এ ব্যবসা। এখানে কাভার্ডভানে রাখা সিলিন্ডার থেকে পাইপ দিয়ে ভরে নিচ্ছে বিভিন্ন যানবাহন। আর তা চড়া দামেও বিক্রি করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কভার্ডভ্যানে সিলিন্ডার লাগিয়ে বিভিন্ন সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনকভাবে উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে অবাধে ভ্রাম্যমাণ এ গ্যাস বিক্রি হচ্ছে। প্রথম দেখায় মনে হবে এটি কাভার্ডভ্যান। কিন্তু ভেতরে স্থাপন করা হয়েছে ৫০টির মতো গ্যাস সিলিন্ডার। এতে চরম ঝুঁকিতে থাকতে হয় স্থানীয়দের।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহিম, আবদুল মোতালেব ও সিদ্দিক মিয়া জানান, প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে কাভার্ডভানে অবৈধভাবে বিক্রি করা হচ্ছে গ্যাস। একাধিকবার জেলা-উপজেলা প্রশাসনকে গোপনে জানানোর পরও গ্যাস বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
অটোচালক রফিক উল্যা, আলাউদ্দিন, মেহেরাজ হোসেন বলেন, ভ্রাম্যমাণ গ্যাসের দাম কিছুটা বাড়তি হলেও হাতের নাগালে পাওয়া যায়। তাই এ গ্যাস কিনতে সবাই আগ্রহী। এতে সময়ও কম লাগে। গ্যাসের বৈধতার প্রশ্নে তারা বলেন, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়, দেখবেন প্রশাসন।
হানিফ চেয়ারম্যান বাজারের অবৈধ গ্যাস বিক্রেতা মাকসুদ জানান, ফায়ার সার্ভিসসহ যাবতীয় কাগজপত্র নিয়েই এ গ্যাসের ব্যবসা করছেন তারা। তবে ফায়ার সার্ভিস, রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস অফিসসহ বিভিন্ন দফতরে খোঁজখবর নিয়ে তার বক্তব্যের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
সোনাপুর বিসিক শিল্পনগরী সংলগ্ন অশ্বদিয়া সেতুর ওপর গ্যাস বিক্রেতা সমির জানান, সদর উপজেলার পূর্ব-পশ্চিম ও দক্ষিণ অঞ্চলে কোনো সিএনজি ফিলিং স্টেশন না থাকায় তারা এ ব্যবসা করছেন। ওই অঞ্চলের যানবাহনগুলো জেলার একলাশপুর এবং পাশের ফেনীর দাগনভূঞা থেকে গ্যাস নিতে হয়। তাদের গ্যাস বিক্রির বিষয়টি প্রশাসনসহ স্থানীয়রা অবগত বলেও জানান তিনি।
রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী মুহাম্মদ আলী বিশ্বাস বলেন, ওই এলাকায় কাভার্ডভ্যানে করে গ্যাস বিক্রির কোনো অনুমোদন দেয়া হয়নি। এ ব্যবসা তারা কীভাবে করছেন তা জানা নেই। বাখরাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষও জানিয়েছেন কাভার্ডভ্যানে গ্যাস নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
সুধারাম মডেল থানার ওসি নবীর উদ্দিন বলেন, অবৈধ এ গ্যাস ব্যবসার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবসায়ী চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সদর ইউএনও মো. আরিফুল ইসলাম সরদার বলেন, কাভার্ডভ্যানে জনবহুল এলাকায় এ রকম গ্যাস বিক্রি সম্পূর্ণ অবৈধ। এ বিষয়ে অচিরেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।