Select Page

আজ শুক্রবার, ২রা জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১২ই জিলকদ, ১৪৪৪ হিজরি সময়: দুপুর ২:১৪

নোয়াখালীতে করোনা আতংকে বন্ধ প্রায় প্রাইভেট চেম্বার, চিকিৎসক-নার্সের সেবায় অনিহা, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ

দৈনিক নোয়াখালীবার্তা
Noakhali Barta is A News Portal of Noakhali.

ষ্টাফ রিপোর্টার: নোয়াখালীতে করোনা আতংকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসক ও নার্সদের সেবায় এমন অনিহায় আরো আতংকিত করে তুলছে সাধারণ মানুষকে। পারসোনাল প্রটেকশন ইক্যুাইপমেন্ট (পিপিই) না থাকায় সেবা দিতে অনিহার কথা জানালেন চিকিৎসক ও নার্সরা। সংকট সমাধানে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে বেসরকারি হাসপাতাল মালিক সমিতি। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস জেলা প্রশাসকের।
করোনা সংক্রামণ আতংকে নোয়াখালীর বেসরকারি হাসপাতালগুলোর বেশিরভাগ প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের ভর্তি রোগিদেরও দেখতে আসছেন না বেশিরভাগ চিকিৎসক। নানা অজুহাতে ছুটি নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নার্স, কেউ কেউ কর্মরত থাকলেও আতংকে হাত গুটিয়ে বসে থাকছেন নার্সরা। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতংক আরো বাড়ছে। ভিন্ন কোনো সমস্যা নিয়েও ডাক্তার দেখাতে পারছেন না রোগীরা।


সরেজমিনে বন্ধকৃত চেম্বারের চিকিৎসকদের পাওয়া যায়নি। তবে নার্স ও চিকিৎসক নেতারা বলছেন, ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও নিজেদের প্রটেকটিভ গাউন, হ্যান্ডগ্লাভস, মাস্ক, ক্যাপ, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ না থাকায় কেউ কেউ চেম্বার বন্ধ রেখেছেন। আতংকে রোগীও দেখছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
দায়িত্বপালনরত এক সেবিকা জানান, কাজ করছি কিন্তু নিজেই রয়েছি ঝুঁকিতে কারণ এ রোগ সর্ম্পকে আমরা অতটা জানি না এবং বুঝতে পারছি না কিভাবে কি হচ্ছে। প্রটেকশনের কিছুই নেই তাই অনেকে পালাচ্ছে আবার অনেক সিস্টার দু’এক দিনের ছুটি চেয়ে চলে গেছে আর ফিরেও আসছে না।
নোয়াখালী প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ও নার্স এসোসিয়েশন সভাপতি ডা: মো. ফিরোজ জানান, এমন পরিস্থিতিতে রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। করোনার বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ চলছে সেখানে চিকিৎসকরা হচ্ছেন ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধা। যদি তারা পালিয়ে যায় তাহলে আর মানুষের ভরসার জায়গা কোথায়।


ফলে সাধারণ মানুষ যেমন দুর্ভোগে পড়েছেন তেমন জটিলতায় পড়েছেন বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। এমন সংকট নিরসনে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানিয়ে সম্প্রতি জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে জেলা বেসরকারি হাসপাতাল মালিক সমিতি। নোয়াখালী প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ও নার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন- প্রাইভেট হসপিটালগুলোতে অনকল যে সকল কনসালটেন্টরা আসেন তারা নিরাপত্তার কারণে আমাদের হসপিটাল সেবা দিচ্ছেন না, ফলে সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এখন আমরা নিজেরাই অসহায় অবস্থায় আছি। আমাদের প্রতিষ্ঠানসমূহ অসহায় অবস্থায় আছে। আমরা এমন দুর্যোগের সময় নোয়াখালীর মানুষের পাশে থাকতে চাই, সেবা দিতে চাই। আমাদের ডাক্তার নার্সরা ভয়ে পালাচ্ছে। গতকাল আমার হাসপাতালের ৭ জন সিস্টার পালিয়েছে।


মডার্ণ হসপিটালের এমডি মিয়া মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন-আমরা স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বিপদে আছি। প্রাইভেট হসপিটালগুলো কারণ হচ্ছে আমরা ডাক্তারদের কল দিলে তখন উনারা বিভিন্ন অযুহাত দিয়ে আসতে চান না। উনারা বলছেন তাদের নিজেদেরওতো কোনো নিরাপত্তা নেই।

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস বলেন, অভিযোগ এসেছে যে, আমাদের সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীরা চিকিৎসকদের কাছ থেকে যথাযথ চিকিৎসাসেবা জনগণ পাচ্ছেন না। আমি সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলেছি। তাদের বক্তব্য হলো তারা পিপি পাচ্ছেন না এবং নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েই তারা সঙ্কিত। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য সচিব ও কমিশনার বরাবরে আমি পত্র দিখেছি এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরেও আমার কথা হয়েছে। আজ না হলেও দু’একদিনের মধ্যে পিপি পাবো এবং সেল্ফ প্রটেকশনের সরঞ্জাম পারো। চিকিৎসকের প্রতি অনুরোধ করবো তারা যেন নিজেদের নিজেদের নিরাপত্তা বজায় রেখে রোগীদের যেন সেবা দিতে পারে। তাদের কাছে রোগি যাবেন এবং সেবা পাবেন। সেটাই আশা করি। বেসরকারি ক্লিনিকের যারা আছেন, তাদের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। চিকিৎসকের নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা তারা বলেছেন। সত্যিকারার্থেই চিকিৎসকের নিরাপত্তা আগে দরকার এবং সে ব্যবস্থা আমরা দ্রুততার সাথে করছি।
দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে এবং চিকিৎসা সেবা স্বাভাবিক না হলে করোনার পাশাপাশি অন্যান্য রোগে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু ঝুঁকি আরো বাড়বে। ভেঙ্গে পড়তে পারে পুরো চিকিৎসাসেবা।

Facebook Comments Box

সর্বশেষ সংবাদ

Archive Calendar

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০