ষ্টাফ রিপোর্টার : নোয়াখালী সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ মানুষকে হুমকি-ধমকি ও নানাভাবে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে মকিমপুরে জোরপূর্বক শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে।
অভিযুক্ত মোঃ জসিম উদ্দিন (৫০) ওই ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে। তিনি সালিশ-বিচার এমনকি থানা পুলিশেকে অমান্য করাও অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় লোজনজন জানান, জসিম উদ্দিন দীর্ঘদিন থেকে একই ইউনিয়নের মকিমপুর মৌজায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সুলতাল আহম্মদের ছেলে আবুল বাশার একটি জমি জবর দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিবার সালিশী বৈঠক হলেও জসিম উদ্দিন সবকিছু অমান্য করে অনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পরিবারটিকে নানাভাবে হয়রানীর চেষ্টা চালিয়ে যায়। সর্বশেষ গত কয়েকদিন আগে আবুল বাশার এ বিষয়ে থানায় সুধারাম মডেল অভিযোগ দিলে তিনি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আবুল বাশারের পৈত্রিক জমি ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে জবর দখলের চেষ্টা করেন।
ভুক্তভোগী আবুল বাশার অভিযোগ বলেন, জসিম উদ্দিন আমার কাছ থেকে ১৩ বছর আগে মকিমপুর মৌজায় এক দাড়ে সাড়ে চার শতাংশ জমি ক্রয় করেন। ওই জমি তাকে দলিল মেতাবেক বুঝিয়ে দেওযার পরও সে বিভিন্ন দাগে আমার পৈত্রিক ও খরিদসূত্রে মালিকানাধীন ও দখলাধীন প্রায় ৩৬ শতাংশ জমি জবর দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জসিম উদ্দিন, তার ভাই ফয়সাল ও জসিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আইউবপুর গ্রামে আমজাদ হোসেন ভড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে আজিজউল্লাপুর গ্রামে আমার বাড়িতে এসে আমাকে হুমকি দিয়ে যায়। আমি ও আমার পরিবারের কেউ আমার মালিকানাধীন জমিতে গেলে তারা আদেরকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে যায়। আবুল বাশার তার পরিবার ও সম্পত্তির নিরাপত্তা এবং জসিম উদ্দিনে হয়রানীর হাত থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ ব্যাপারে অশ্বদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন বাবলু জানান, জসিম উদ্দিন স্থানীয় সালিশ বিচার মানে না। সে ও তার লোকজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হয়রানী করছে।
অভিযুক্ত জসিম উদ্দিন বলেন, আমি ১৩ বছর আগে আবুল বাশারের কাছ থেকে সাড়ে চার শতাংশ জমি ক্রয় করি। দাগ নম্বর অনুযায়ী আমার ক্রয়কৃত জমি খনা খন্দক হওয়ায় আমি এখন রাস্তার পাশে দখল নিচ্ছি।
এ ব্যাপারে সুধারাম মডেল থানার ওসি সাহেদ উদ্দিন জানান, অভিযুক্ত জসিম উদ্দিন এলাকায় অনৈতিক প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেন। তার বিরুদ্ধে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খালা ভঙ্গের বহু অভিযোগ রয়েছে। সে থানায় এসে পুলিশের সাথেও দুব্যবহার করে। এ ব্যাপারে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত-শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সুলতাল আহম্মদ আমৃত্যু অশ্বদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন অশ্বদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন মুক্তি সংগ্রাম কমিটির সভাপতি। ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাজাকারদের সহায়তায় পাক হানাদার বাহিনী তাঁকে ধরে নিয়ে মাইজদী পিটিআই ভবনে তাদের টর্সার সেলে আটকে রেখে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে। চারদিন পর নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের পাশের বধ্যভূমি থেকে মাটি চাপা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পরিবার। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সুলতাল আহম্মদের একমাত্র ছেলে আবুল বাশার বর্তমানে রোগ শোকে ভুগছেন।

Select Page