Select Page

আজ বৃহস্পতিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি সময়: বিকাল ৩:২৬

নোয়াখালী পুলিশ অক্সিজেন ব্যাংকের সেবা ছড়িয়ে পড়ল আশপাশেও

দৈনিক নোয়াখালীবার্তা
Noakhali Barta is A News Portal of Noakhali.

ষ্টাফ রিপোর্টার :  গত বছরের জুনের শেষ দিকে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন নোয়াখালী জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) এস এম কামরুল হাসান শিপন। দেখেন, সড়কের পাশে দাঁড়ানো অটোরিকশায় শ্বাসকষ্টে ষাটোর্ধ্ব এক নারী ছটফট করছেন। তিনি দ্রুত ওই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন। মায়ের বয়সী একজনকে চোখের সামনে মারা যেতে দেখে একটি অক্সিজেন ব্যাংক করার ভাবনা আসে তাঁর মাথায়। নিজের আগ্রহের কথা তিনি জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেনকে বলেন। তিনিও রাজি হয়ে যান। এভাবেই যাত্রা শুরু ‘নোয়াখালী পুলিশ কোভিড অক্সিজেন ব্যাংক’এর।
গত বছরের ২৬ জুন ‘মানুষের জন্য আমরা’ স্লোগানে এসপি আনুষ্ঠানিকভাবে অক্সিজেন ব্যাংকের উদ্বোধন করেন। এ বিষয়ে কামরুল হাসান বলেন, শুরুতে ১০টি বড় আকারের হাই ফ্লো অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে অক্সিজেন ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়। একে একে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অল্প দিনেই যোগ হয় আরও ৪৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার। এখন ব্যাংকে সিলিন্ডারের সংখ্যা ৫৫টি। সব কটিই হাই ফ্লো অক্সিজেন সিলিন্ডার। পুলিশ বিভাগের এই উদ্যোগে শামিল হয়ে সিলিন্ডার দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে এসেনস অক্সিজেন ও আবুল খায়ের গ্রুপ। প্রতিষ্ঠান দুটি বেশ কয়েকটি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়েছে এবং অক্সিজেন রিফিল করতে এখনো সহযোগিতা করছে।
প্রথমে নোয়াখালী শহর ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের অক্সিজেন সেবা দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। এখন এই ব্যাংকের সেবার পরিধি ছাড়িয়ে গেছে পাশের লক্ষ্মীপুর, ফেনী ও কুমিল্লা জেলাতেও। গত এক বছরে এসব অঞ্চলের ২৯৭ জনকে অক্সিজেন সেবা দেওয়া হয়েছে এই অক্সিজেন ব্যাংকের মাধ্যমে। এর মধ্যে নোয়াখালীর ২০৯ জন, লক্ষ্মীপুরের ৭৩, কুমিল্লার ৯ ও ফেনীর ৬ জন রোগী অক্সিজেন সেবা পেয়েছেন। সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে এই অক্সিজেন সেবা দেওয়া হয়েছে। কল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গভীর রাতেও পুলিশ সদস্যরা নিজ উদ্যোগে গাড়িতে করে করোনা রোগীর বাড়িতে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিচ্ছেন।
নোয়াখালী জেলা পুলিশের এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন দূরদূরান্তের স্বেচ্ছাসেবীরাও। তাঁদের একজন লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা ইসলামী ফাউন্ডেশনের লাশ দাফন কমিটির দলনেতা মো. সেলিম হোসাইন। তিনি স্থানীয় শোশালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, গত বছর যখন করোনা ও শ্বাসকষ্টে চারদিকে লোকজন অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছেন, তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অক্সিজেন ব্যাংকের কথা জানতে পারেন। পরে তিনি স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যুক্ত হন। তিনি পুলিশ অক্সিজেন ব্যাংক থেকে বিনা মূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে রামগঞ্জের ৪৩ জন রোগীকে সেবা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আটজন মারা গেছেন। বাকিরা সবাই সুস্থ হয়েছেন। তিনি এমন মহতী উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তৃপ্ত বলে জানালেন।

Facebook Comments Box

সর্বশেষ সংবাদ

Archive Calendar

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০