ষ্টাফ রিপোর্টার : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে পৌরসভার লোকজন আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উপজেলা বিএনপির সভাপতির পারিবারিক মার্কেটের একাংশ ভেঙে দিয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে মোহাম্মদী সুপার মার্কেট নামের ওই দ্বিতল মার্কেট ভাঙা শুরু হয়।
মার্কেট ভাঙা শুরু হলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই ওরফে সেলিমের ছোট ভাই বেলায়েত হোসেন ওরফে স্বপন বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে মুঠোফোনে অবহিত করেছেন বলে জানা গেছে। প্রশাসন এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন । এদিকে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, ওই মার্কেট না ভাঙার জন্য আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার বিষয়টি থানা-পুলিশের একটি দল কাদের মির্জাকে অবহিত করেছে। এই বিষয়ে পুলিশের যা করণীয়, পুলিশ তাই করেছে বলে তিনি জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল থেকে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা ও তাঁর শতাধিক অনুসারীর উপস্থিতিতে পৌরসভার কর্মচারী ও শ্রমিকেরা বসুরহাটের জিরো পয়েন্ট-নিত্যানন্দমোড় এলাকার ওই মার্কেটের খাল পাড় অংশের প্রায় ১০ ফুট অংশ ভাঙা শুরু করে। ১৯৯৯ সালে আবদুল হাই ওরফে সেলিমের পারিবারিক প্রায় ১৬ শতাংশ জমির ওপর মার্কেটটি নির্মাণ করা হয় বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, মেয়র লোকজন নিয়ে আকস্মিকভাবে মার্কেটে ভাঙচুর শুরু করায় কমপক্ষে ১২ জন ব্যবসায়ী আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তাঁদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের অনেক মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু মেয়র ও তাঁর লোকজনের ভয়ে ব্যবসায়ীদের কেউই এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। অনেকে নিরুপায় হয়ে কিছু মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন।
আবদুল হাই সেলিমের ছোট ভাই বেলায়েত হোসেন বলেন, তাঁদের মার্কেটটি সরকারি জায়গায় পড়েছে দাবি করে ২০২০ সালের প্রথম দিকে কাদের মির্জা তাঁদের একটি চিঠি দেন। ওই চিঠির বিরুদ্ধে তাঁরা জেলা সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা করেন।
পরে ওই বছরের৪ মার্চ আদালত থেকে মার্কেটের বিষয়ে ‘স্থিতাবস্থা’ বজায় রাখার জন্য আদেশ জারি করা হয়। ওই আদেশ এখনো বলবৎ রয়েছে। এরই মধ্যে আজ শুক্রবার সকাল থেকে কাদের মির্জা দলবল নিয়ে মার্কেট ভাঙা শুরু করেছেন।
বেলায়েত হোসেন জানান, ভাঙা শুরু হওয়ার পর তিনি জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার এবং কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিকে মুঠোফোনে অবহিত করেছেন। তাঁরা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালেও দুপুর পর্যন্ত মার্কেট ভাঙা অব্যাহত রয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশের এক সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘুরে ফিরে চলে আসেন বলে তিনি দাবি করেন।
এ বিষয়ে জানতে কাদের মির্জার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তবে প্রতিবারই তাঁর নম্বর ব্যস্ত পাওয়া যায়। মার্কেট ভাঙার অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে চেয়ে তাঁর মুঠোফোনে একটি খুদে বার্তা পাঠানো হয়। তবে কাদের মির্জা খুদে বার্তার কোনো জবাব দেননি। তাই এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এদিকে কাদের মির্জা ঘোষিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুছ আজ দুপুরে বলেন, ‘দলীয় বিষয় ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে কাদের মির্জার সঙ্গে আমার কথা হয় না। এগুলো তাঁর (কাদের মির্জার) পৌরসভার বিষয়। তিনি পৌরসভা থেকেই এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এর সঙ্গে দলীয় সম্পর্ক নেই।