ষ্টাফরিপোর্টার: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুরে বাবার কোলে গুলিবিদ্ধ হয়ে চার বছরের শিশু তাসপিয়া আক্তার নিহত হওয়ার ঘটনায় আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ।গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে কবিরহাট উপজেলার শ্বশুরবাড়ি থেকে মো. জসিম উদ্দিন (২৬) নামের ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয় ।জসিম উপজেলার হাজীপুর গ্রামের মোল্লা বাড়ির বাসিন্দা ।
জসিমকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে এই হত্যকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলো ।তবে এখনো ধরা পড়েননি মূল অভিযুক্ত মো. রিমন, মো. বাদশা, মো. মহিন, মো. রফিক ও অন্য সহযোগীরা ।ঘটনার দিন রাতে তাঁদের অনেকেই এলাকায় অবস্থান করলেও পরবর্তী সময়ে তাঁরা সবাই গা ঢাকা দিয়েছেন ।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক আজ শনিবার সকালে বলেন, শিশু তাসপিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামি জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ।তিনি মামলার এজাহারের ১৫ নম্বর আসামি। গতকাল রাতে কবিরহাট উপজেলার শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ।
ওসি মীর জাহেদুল হক বলেন, গ্রেপ্তার জসিম উদ্দিনকে আজ দুপুর নাগাদ নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হবে ।আদালতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে ।ওসি জানান, এর আগে একই মামলায় গ্রেপ্তার অন্য তিন আসামির বিরুদ্ধেও আদালতে সাত দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয় ।তবে ওই আবেদনের এখনো শুনানি হয়নি ।
এদিকে শিশু তাসপিয়া হত্যায় অভিযুক্ত মূল অপরাধীরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁর বাবা আবু জাহের ।গতকাল রাতে তিনি বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি প্রশাসন আমার মাছুম বাচ্চার খুনিদের ধরতে না পারে, তাহলে আমি রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াব । মানববন্ধন করব ।আমি আমার কলিজার টুকরার হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই ।’
এ বিষয়ে ওসি মীর জাহেদুল হক বলেন, তাসপিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আসামি রিমন, বাদশা, মহিন, রফিকসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে ।গতকাল রাতেও বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে কিন্তু তাঁদের কাউকে পাওয়া যায়নি ।তবে আশা করা যায়, শিগগিরই তাঁরা ধরা পড়বেন ।
গত বুধবার বিকেল চারটার দিকে চার বছরের শিশু তাসপিয়া আক্তারকে চিপস-জুস কিনে দিতে হাজীপুরের মালেকার বাপের দোকানে যান প্রবাসী আবু জাহের ।তিনি তাঁর ভাগনে আবদুল্লা আল-মামুনের দোকানে বসে কথা বলছিলেন ।এ সময় পূর্ব বিরোধের জেরে পাশ্ববর্তী দূর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার সন্ত্রাসী রিমন কয়েকজন সহযোগী নিয়ে সেখানে এসে মামুন ও জাহেরকে গালিগালাজ করেন ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, একপর্যায়ে সন্ত্রসীরা কয়েকটি ফাঁকা গুলি করেন ।এ সময় জাহের তাঁর মেয়েকে কোলে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন ।তখন পেছন থেকে দ্বিতীয় দফা গুলি করেন রিমন ।এতে শিশু তাসপিয়ার মাথা ও মুখমণ্ডলে গুলি লাগে ।আবু জাহেরের চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে ।গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে বুধবার রাতে দিকে তাসপিয়ার মৃত্যু হয় ।পরে সন্তানের লাশ নিয়ে বাবা আবু জাহের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে পুনরায় এলাকায় ফিরে আসেন ।
তাসপিয়া খুনের ঘটনায় তার খালু হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বুধবার বেগমগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন ।মামলায় মো. রিমনসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয় ।আরও ১০ থেকে ১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে ।আগে এই মামলায় পুলিশ তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে ।তাঁরা হলেন এমাম হোসেন ওরফে স্বপন (৩০), জসিম উদ্দিন ওরফে বাবর (২৩) ও দাউদ নবী ওরফে রবিন (১৭) ।

- প্রচ্ছদ
- জাতীয়
- নোয়াখালী
-
Featured
-
Featured
-
Featured
-
- লক্ষ্মীপুর
- ফেনী
- প্রবাসে বৃহত্তর নোয়াখালী
- মতামত
- আরও
Select Page